নওগাঁর মহাদেবপুরে সন্ত্রাসী কায়দায় ধান কাটার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী নেতার বিরুদ্ধে
নওগাঁ প্রতিনিধি-
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার বিশ্বনাথপুর নামক এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসানসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধান কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত (৩০নভেম্বর) এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মিরাজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আনিসুর রহমান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী ও ঘটনার তথ্য সুত্রে জানা যায় একই এলাকার মােঃ গিয়াস উদ্দীনের ছেলে মেহেদী হাসান, মৃত আছর উদ্দীন ছেলে মােঃ গিয়াস উদ্দীন,মৃত কছির উদ্দীনের ছেলে মােঃ মােস্তাফিজুর রহমান, মৃত কফিলউদ্দিনের ছেলে মােঃ আব্দুর রাজ্জাক, মৃত গুলজারের ছেলে মোঃ সালাম মৃত কানচার ছেলে জিল্লুর রহমান,সোহরাবের ছেলে মজিদুল,মৃত জয়ানালের ছেলে মােঃ রফিকুল ইসলাম, হাইচানের ছেলে মােঃ সোহরাব ও মােঃ আশরাফুল (ভােদন) আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ রনি ও রকি,মূত খইবর চকিদারের ছেলে মােঃ আব্দুল মালেক এবং কর্তনকৃত ধান বহনকারী ট্রলি ড্রাইভার মাসুদ রানা সহ অজ্ঞাত আরও বেশ কয়েকজন হাসুয়া, লাঠি, লোহার রড়সহ দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় ভুক্তভোগীর পিতার খতিয়ানভুক্ত ও দলিল মূলে প্রাপ্ত হক দখলি আমন ধান রোপনকৃত জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে ধান কাটতে শুরু করে। এসময় ভুক্তভোগী কৃষক আনিসুর রহমান তাদের বাধা দিলে তারা তাকে মারধরের জন্য উদ্ধত হলে ঘটনাস্থল থেকে প্রানের ভয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। পরে সরকারি জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ তে কল দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে কর্তনকৃত ধানভর্তি ট্রুলি জব্দ করেন। এসময় পুলিশ আসার খবর পেয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। পরবর্তীতে ওই কৃষক থানায় উপস্থিত হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিরসনের আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে তারা আপোষ মিমাংসায় রাজি হয় নাই। পরে ওই কৃষক আইনী সহায়তা পেতে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন তবে পুনরায় আপোষ মিমাংসার আশ্বাস দিয়ে সেই এজাহারও নথিভুক্ত করেননি মহাদেবপুর থানা পুলিশ ।
এব্যপারে ভুক্তভোগী ওই কৃষকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার রোপনকৃত আমন ধান উল্লেখিত অভিযুক্তরা অবৈধভাবে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ায় তিনি তাতে বাঁধা দিলে তারা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে তার দিকে তেড়ে আসে। তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রানরক্ষা পেয়েছে বলে জানাই। বর্তমানেও সন্ত্রাসীরা বিভিন্নভাবে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। তিনি থানায় অভিযোগ করলে, বিষয়টি আপোষ মিমাংসার আশ্বাস দিয়েছিল কিন্তু তারা আর আপোষ করে নাই। পরবর্তীতে তিনি থানায় এজাহার করতে গেলে পুনরায় আপোষ মিমাংসার আশ্বাস দিয়ে আসছেন। এ ব্যাপারে তিনি বেশ কয়েকবার থানায় গেলেও থানা তার মামলা নেয়নি বলে জানান। ভুক্তভোগী বলেন,কেটে নেওয়া ধানের আনুমানিক মূল্য ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা হবে। সেটিও থানা পুলিশ জব্দ করে স্থানীয় একজনের জিম্মায় রেখেছেন। তিনি বলেন, সে আইনের প্রতি ভীষণ শ্রদ্ধাশীল তাই দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার তিনি চেয়েছেন।
এব্যপারে স্থানীয়দের সাথে কথা হলে একাধিক ব্যক্তিরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আনিসুর রহমানই ওই জমিতে আমন ধান রোপন করেছিলেন তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা উক্ত জমিটি তাদের দাবী করে দখলের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তারা।
৩ নং আসামি মোস্তাফিজুর এর সাথে ফোনে কথা হলে,, তিনি এই প্রতিবেদককে জানান – তপশীল ভুক্ত সম্পত্তি আমাদের পূর্বপুরুষদের এবং খতিয়ানভুক্ত মালিক আমরা। এজাহারে বাদি আনিসুর রহমান যোর করে ঐ সম্পত্তিতে ধান রোপণ করেছিল। গত ৩০/১১/২৪ তারিখে আমরা ধান কেটে ছিলাম, ধান কাটা শেষ না হতেই আনিসুর রহমান ট্রিপল নাইনে ফোন করে
পুলিশ ডেকে নিয়ে এসে একটা টলি আর কিছু ধান জব্দ করে নিয়ে যায়। পুলিশের মাধ্যমে জব্দকৃত টলি ও কিছু ধান তৃতীয় পক্ষের একজনের কাছে জিম্মায় রাখা আছে।
এবিষয়ে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে কথা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বলে স্বীকার করেন, তবে মামলা নথিভুক্ত না করার বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন তিনি।