মোহাম্মদ মাসুদ নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম নগরীর সিএমপি এলাকায় ব্যবসায়ীকে অপহরণের ১২ ঘন্টার মধ্যেই মূল পরিকল্পনাকারীসহ ০৬ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ; অপহৃত ব্যবসায়ী উদ্ধার।
২৭নভেম্বর রাত সাড়ে ৩টায় হাটহাজারী থানাধীন অভিযানে মুক্তিপণ বাবদ টাকা নিতে আসা ৬ জন আসামিকে আটক করেন। গ্রেফতারকৃত আসামি ১) আল ফয়জুল আলম প্র. রবিউল (৩৫), ২) মোঃ সোহানুর রহমান (২৮), ৩) মোঃ সাদেকুল আলম (২৯), ৪) মোঃ লোকমান শরীফ (৩৫), ৫) মোঃ শফিকুল ইসলাম বাপ্পী (৩০) ও ৬) মোঃ আরমান প্রঃ মানিক (৪৪)।
গোপন সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হাটহাজারী মোড় বাস টার্মিনালসংলগ্ন দরবার হোটেলের সামনে রাস্তার উপর হতে আসামিকে আটক করেন।
সিএমপি অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (পাবলিক এন্ড মিডুয়া) মো. তারেক আজিজ বলেন, ঘটনাক্রমে
মোঃ হারুন রশিদ (৫৩) নামের এক ব্যবসায়ীকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে অপহরণের বারো ঘন্টার মধ্যেই উদ্ধার করেছে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ। মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি জিপগাড়ি ও একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করেছে পুলিশ।
অপহৃত মোঃ হারুন রশিদ হলেন চট্টগ্রামের ভূজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা। গত ২৬ নভেম্বর রাত ০৮.০০টায় হারুন রশিদ বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন মাইজপাড়া আনোয়ারুল আজিম পেট্রোল পাম্পের বিপরীতে এএইচবি থাই অ্যালুমিনিয়াম এসএস অ্যান্ড গ্লাস হাউজের আনুমানিক ২৫ গজ দক্ষিণে রাস্তার উপর তার পূর্ব-পরিচিত মতিউর রহমান লিয়াকত ও খুরশিদ আলমের সাথে কথা বলার সময় হাটহাজারী থেকে অক্সিজেনগামী একটি রূপালী রঙের প্রাইভেট কার তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে ৩ জন এবং আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আরো ৮/৯ জন ব্যক্তি হঠাৎ মোঃ হারুন রশিদকে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগে উক্ত প্রাইভেট কারে জোরপূর্বক উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা হারুন রশীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে চার লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহরণের সংবাদ পেয়ে দ্রুততার সাথেই বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই জসিম উদ্দিন এর নেতৃত্বে এসআই সঞ্জয় শর্মা, এসআই মোঃ নাছির উদ্দিন, এএসআই মোঃ মেজবাহ উদ্দিন ও এএসআই সৈয়দ আবুল হাশেমসহ একটি আভিযানিক দল ভিকটিমের স্ত্রী ও ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী এবং রাউজান থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এক পর্যায়ে আসামিদের আটক করে।
আসামিদের হতে একটি Hunk মোটরসাইকেল এবং একটি জিপগাড়িসহ আটক করলেও অজ্ঞাতনামা আসামিরা ভিকটিমের মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায় ভিকটিমকে একটি রূপালী রঙের প্রাইভেট কার, আটককৃত জিপ ও মোটরসাইকেল যোগে অপহরণ করে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন সুলতানপুর সিটিয়াপাড়া হারুন চেয়ারম্যানের বাড়ির নাছির উদ্দিনের ঘরে নিয়ে আসামি মঞ্জুর আলমকে
বুঝিয়ে দেয়। আসামিরা আটক হওয়ার পর ভিকটিমকে উক্ত স্থান থেকে অন্যত্র নিয়ে যায়। রাতের বেলায় বিভিন্ন পাহাড়ে জঙ্গলে নিয়ে পলাতকসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা মুক্তিপণের টাকার জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। পুলিশ আটককৃত আসামিদেরকে নিয়ে তাদের দেখানোমতে নাসির উদ্দিনের বাড়িসহ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন সম্ভাব্য সকল স্থানে ভিকটিমেকে উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রাখে। অভিযানের এক পর্যায়ে ২৭ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ১০.৪৫টার সময় চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন হলুদিয়া ইউনিয়নের রহমানিয়া মাদ্রাসার পাশে ভিকটিম মোঃ হারুন রশিদকে উদ্ধার করে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ ।দেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের নিমিত্তে অভিযান অব্যাহত আছে।