মো. ইসমাইলুল করিম নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় সমবায় দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়বো দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষ্যে পার্বত্য জেলার বান্দরবানের লামার উপজেলায় পালিত হয়েছে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস- বর্ণাঢ্য র্যালী, সমবায় পতাকা উত্তোলন, উপজলা হল রুমে আলোচনা সভায় আয়োজন করা হয় শনিবার ০২ নভেম্বর সকালবেলা। উপজেলা প্রশাসন ও সমবায় বিভাগ যৌথভাবে দিবস’টির আয়োজনে উপজেলা সমবায় অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌং, বিশেষ অতিথি হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার তারানা, উপজেলা কৃষি অফিসার আশরাফুজ্জামান, উপজেলা মৎস্য অফিসার আব্দুল্লা-হিল-মারুফ, সমবায় পরিদর্শক মোহাম্মদ রহিম উদ্দিন,উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার এ কে এম শহিদুল ইসলাম, মাতামুহুরি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম সহ প্রমূখ।
আলোচনা সভা অতিথিরা বক্তব্য বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সমবায় ভিত্তিক সমাজ গড়ার কোনো বিকল্প নেই। দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান উপায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো ‘সমবায়’। সম্মিলিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার দ্বারা সমবায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে স্বনির্ভরতা অর্জন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। মূলধন গঠন, বিনিয়োগ, পুষ্টিচাহিদা পূরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, আবাসন সুবিধা সম্প্রসারণ, আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, গ্রামীণ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সুবিধাবঞ্চিত নারী, তৃতীয় লিঙ্গ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনে সমবায় ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে।
অতিথিরা আরও বলেন, সমবায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দ্বারা ন্যায়নীতি ও নিষ্ঠার ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত এক সামষ্টিক কর্মপ্রচেষ্টা। সমবায় প্রতিষ্ঠানসমূহে ভ্রাতৃত্ব, সমবেত প্রচেষ্টা ও মূল্যবোধের চর্চা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত এবং বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার নানামুখী উন্নয়ন ও সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
আলোচনা সভা আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে ৫৩ তম ‘জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪’ পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে আমি দেশের সকল সমবায়ীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। অর্থনীতিকে গতিশীল করে গড়ে তুলতে সমবায় অঙ্গনেও সংস্কার প্রয়োজন। আমাদের সমাজে উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য দক্ষ ও টেকসই সমবায় ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে এবারের জাতীয় সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘সমবায়ে গড়বো দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।
সমবায় খাত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নিবিড় পেশা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে সমবায়ীদের ঋণ সুবিধা, প্রযুক্তিগত ও অন্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমবায়ীদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাচ্ছে। একটি নতুন অর্থনীতির স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমবায়কে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আজ কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা হউক লামা বাসীর।