এম এ নাঈম বিশেষ প্রতিবেদক।
ইসলামি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচার এবং প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনের কাহিনী, শিক্ষা ও দিক্ষার উপর ভিত্তি করে জীবনকে অনুসরণ ও মুসলমানদের অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সদরঘাট থানা এক বিশাল সিরাতুন্নবী (সঃ) মাহফিলের আয়োজন করে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরীর কদমতলি এলাকার রাহাত সেন্টার প্রাঙ্গনে এই বিশাল সিরাতুন্নবী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াতে ইসলামী সদরঘাট থানা আমির জনাব মোঃ আব্দুল গফুর এর সভাপতিত্বে এই সিরাতুন্নবী (সঃ) সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিংপুরুষ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আমির, সাবেক সংসদ সদস্য জনাব আলহাজ্ব মোঃ শাজাহান চৌধুরী। সম্মেলনের প্রথম ওয়ায়েজ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ইসলামী স্কলার জনাব ডক্টর মাওলানা বি. এম. মফিজুর রহমান আজহারী। বিশেষ ওয়ায়েজ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মসজিদ মিশন চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি, বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার জনাব মাওলানা মোঃ মোহছেন আলী হোসাইনী।
প্রথম ওয়ায়েজ ডক্টর মাওলানা বি. এম. মফিজুর রহমান আজহারী নবী (সঃ)সম্পর্কে বলেন, নবী মুহাম্মদ (সা.) শান্তি, মৈত্রী এবং দয়া’র শিক্ষা দেন এবং তাঁর জীবনে এই নীতিগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে অনুসরণ করেন। তিনি মানবতার জন্য আল্লাহর একত্ববাদ, নৈতিকতা, সমাজিক ন্যায় ও সাম্যের শিক্ষা দেন। তাঁর মূল বার্তা হলো “তাওহিদ” বা আল্লাহর একত্বের গুরুত্ব।
নবীজির সময়ে তিনি সমাজের দরিদ্র ও অসহায়দের জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং সমতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করেন।
বিশেষ ওয়ায়েজ বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার জনাব মাওলানা মোঃ মোহছেন আলী হোসাইনী বলেন, নবী মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের প্রবর্তক এবং শেষ নবী হিসেবে পরিচিত। তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। নবীজির জীবনযাপন সাধারণ এবং নম্র ছিল।
নবীজির জীবনধারা মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি আদর্শ, যা আজও অনুসরণ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আমির, সাবেক সংসদ সদস্য জনাব আলহাজ্ব মোঃ শাজাহান চৌধুরী বলেন, এ মহান সম্মেলনে আমরা জড়ো হয়েছি বিশ্ব মানবতার শিক্ষক, সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন, আদর্শ ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করতে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল কোরআনের প্রতিফলন। তিনি মানবজাতিকে ইসলামের সুশৃঙ্খল জীবনব্যবস্থা, নৈতিকতা, সহমর্মিতা ও ন্যায়বিচারের মূল শিক্ষা প্রদান করেছেন।
তিনি আরও বলেন,আজকের পৃথিবী, যেখানে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের সম্মুখীন, সেখানে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষার পুনরায় অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে একজন উত্তম মানুষ, উত্তম নেতা, এবং উত্তম মুসলিম হওয়া যায়। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের জন্য শিক্ষণীয়।
জনাব আলহাজ্ব মোঃ শাজাহান চৌধুরী বলেন,আমরা যদি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের দিকে তাকাই, তার ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবন—সব ক্ষেত্রেই তিনি আমাদের জন্য আদর্শ রেখে গেছেন। তিনি আমাদের দেখিয়েছেন কীভাবে একজন মুসলিম সমাজে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে এবং ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
আজকের এই সম্মেলন আমাদের জন্য একটি সুযোগ, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের জীবনকে আরো সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারি। আসুন, আমরা সবাই তার আদর্শকে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োগ করি এবং শান্তিময় একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করি।
সিরাতুন্নবী (সঃ)সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ২৭ নং ওয়ার্ডের আমির ফজলে এলাহী শাহীন, ৩০ নং ওয়ার্ডের আমির হারুনুর রশিদ দিদার, ২৮ নং ওয়ার্ডের আমির কবির আহমদ, ২৯ নং ওয়ার্ডের আমির বেলায়েত হোসেন, বাইতুল মাল সম্পাদক আহসান’সহ স্থানীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।