মোহাম্মদ মাসুদ নিজস্ব প্রতিবেদক।
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল তীব্র নিন্দার ঝড় মুখে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডে দৃশ্যে। গান বিনোদন প্রদর্শনেে চাঞ্চল্যকর আলোচিত হত্যাকাণ্ড জড়িতদের আটক। গান গেয়ে গেয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার মূলহোতাসহ ০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে সিএমপি পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশ।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (পাবলিক রিলেশন ও মিডিয়া অফিসার) মোহাম্মদ তারেক আজিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল ২৪ সেপ্টেম্বর,বিকাল ৫টায়২ নং গেইট সংলগ্ন বিপ্লব উদ্যান এলাকায় অভিযানে ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী জুয়েল (৪২)-কে গ্রেফতার করে। বাকিরা হলেন মোঃ সালমান (১৬) ও আনিসুর রহমান ইফাত (১৯)।
মোঃ সালমান কে চকবাজার থানাধীন শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে একই দিন সন্ধ্য ৭:৩০ টায় ও রাতে ২ নং গেইট সংলগ্ন মসজিদ গলি থেকে আনিসুর রহমান ইফাত-কে গ্রেফতার করা হয়।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, ১৩ আগস্ট রাত ১০টা থেকে ১৪ আগস্ট রাত ০১:৩০টার মধ্যবর্তী সময়ে মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ২ নং গেইটস্থ ট্রাফিক চত্বরে ছিনতাইকারী সন্দেহে গান গেয়ে গেয়ে হাত-পা বেঁধে এবং ট্রাফিক পোস্টের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারপিট করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ভিকটিম মোঃ শাহাদাত হোসেন (২৪)-কে।
হত্যার পর অপকর্ম গোপন করতে গত ১৪ আগষ্ট (১৩ আগস্ট দিবাগত) রাতের অন্ধকারে মৃত শাহাদাতকে পাঁচলাইশ মডেল থানাধীন বদনাশাহ মাজারসংলগ্ন রাস্তার সামনে অজ্ঞাতনামা লোকজন ফেলে চলে যায়। পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উক্ত লাশ উদ্ধারে চমেক হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ মৃতের ময়নাতদন্তে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর ও মৃতের পরিবারের থানায় এজাহার পাঁচলাইশ মডেল থানার মামলা নং- ১৩/ ১৫/০৮/২০২৪ দায়ের করেন।
উক্ত বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ২১ আগস্ট থেকে পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রচারিত ও ভাইরালে জেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োর সূত্র ধরে গোপন সূত্রে তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় “চট্টগ্রাম ছাত্র জনতা ট্রাফিক গ্রুপ” নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ শনাক্ত করা হয়।
সেইসূত্র ধরে গ্রুপটির অ্যাডমিন ও হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী প্র.জুয়েল (৪২)-কে শনাক্ত হয়। গোপন সূত্রে তথ্যে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আভিযানিক টিম উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ (অতিরিক্ত ডিআইজি)-এর সার্বিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পাঁচলাইশ থানার টিমের সাপোর্টে আসামিদের ধরতে সক্ষম হয়।
তার দেওয়া তথ্যে উক্ত ‘‘চট্টগ্রাম ছাত্র জনতা ট্রাফিক গ্রুপ’’-এর সক্রিয় সদস্য এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এবং ভিডিয়ো ফুটেজে দৃশ্যমান মৃতপ্রায় শাহাদাতের গাল চেপে ধরে ব্যঙ্গাত্বকভাবে মন্তব্য করা ‘‘এ ভাইয়া সবাই একটা একটা সেলফি তুলে চলে যান ” এমন আপত্তিকর মন্তব্যে বলা যা আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত।
ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী জুয়েল ও মোঃ সালমান উভয়ের তথ্য যাচাইবাছাই করে ‘চট্টগ্রাম ছাত্র জনতা ট্রাফিক গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে একই দিনে শাহাদাত হোসেন আটক করা হয়।
গ্রেফতারে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের যাবতীয় বিবরণসহ নিজেদের সক্রিয় থাকার কথা স্বীকার করে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।