মোহাম্মদ মাসুদ নিজস্ব প্রতিবেদক
সারা দেশে সাড়ে ৩হাজার অবৈধ ইটভাটার বন্ধের তালিকায় শুধু চট্টগ্রামেই রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক অবৈধ ইনভাটা। যার নেপথ্যে রয়েছে বিগত সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপিদের অপক্ষমতার ছত্রছায়ায় যোগসাজশে।ক্ষমতাসীন দলীয় নেতা অপক্ষমতার দাপটে দুর্নীতিবাজ লুটপাটে গোপনে ও প্রকাশ্যে আইনিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়ে বেআইনিভাবে প্রভাব খাটিয়েছে সর্বক্ষেত্রে। ধারাবাহিক শৃঙ্খলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এসব ইটভাটা গড়ে তোলেন।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। উপদেষ্টার ঘোষণার পর পরই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
চট্টগ্রামে সদ্য যোগদানকারী জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, অবৈধ ইটভাটা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অবৈধ বালি উত্তোলন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযানে প্রশাসন সার্বিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন সকল ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে। নতুন করে কোনো ইটভাটার অনুমোদন দেওয়া হবে না।
জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, বোয়ালখালী, দোহাজারী ও সাতকানিয়া উপজেলায় অন্তত সাড়ে তিনশ ইটভাটা রয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত তিন শতাধিক ইটভাটার কোনো বৈধতা নেই। বিগত সরকারের প্রভাবশালী নেতারা ক্ষমতার দাপটে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এসব ইটভাটা গড়ে তোলেন। অভিযোগ রয়েছে, সংরক্ষিত বন এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন বনের মূল্যবাবদ গাছ পুড়িয়ে গত ১৫ বছর ধরে এসব ইটভাটায় ইট তৈরি হয়ে আসছিলো।
প্রাপ্ত তথ্য মতে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি ইটভাটা রয়েছে চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়। বিশেষ করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নির্বাচনী এলাকাতেই চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ট রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলমের সরাসরি নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ ইটভাটা বছরের পর বছর ধরে চলমান রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হওয়ার পর তিনি পলাতক আছেন বলে স্থানীয়ভাবে যোগাযোগ করে জানা গেছে।
ক্ষমতার প্রভাবে অবৈধভাবে গড়ে উঠা চট্টগ্রাম জেলার প্রায় তিন শতাধিক অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টার ঘোষণার পর পরই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।