চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অচলাবস্থা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা, চট্টগ্রামে জিওসি ও বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি
নিজস্ব প্রতিবেদক।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অচলাবস্থা নিরসনে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে ফোরামের সভাপতি শিব্বির আহমদ ওসমান ও সাধারণ সম্পাদক এম.এ. নাঈমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি চট্টগ্রামের জিওসি এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে তাদের অফিসে স্মরকলিপি প্রদান করেন। সাথে সাথে তারা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও তথ্য উপদেষ্টাকেও স্মারকলিপি প্রেরণ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ৫ই আগস্ট (২০২৪ খ্রি.) ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও পলায়নের পর চট্টগ্রামের নির্যাতিত, বৈষম্যের শিকার সম্পাদক-সাংবাদিকরা ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব’র সম্মুখে এসে শোকরানা সমাবেশ করে। এই সমাবেশ শেষ হবার পর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ঐ সময়ের কমিটি কর্মকর্তারা ক্লাবে তালা মেরে চলে যায়। ঐ কমিটি ছিল আমাদের দেশের প্রেসক্লাব সমূহের
মধ্যে একমাত্র পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের স্তাবক ও দোসর ঘৃণ্য কমিটি। ঐ কমিটির কর্মকর্তারা চট্টগ্রামের বৃহত্তর সম্পাদক- সাংবাদিক সমাজকে নির্যাতন ও বৈষম্য করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। শুধু তা নয় সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময়ে ঐ কমিটির কর্মকর্তা ও তাদের দোসর নীতিজ্ঞানশূন্য, দলকানা সাংবাদিকরা ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালাতে পুলিশকে উস্কানি দিয়েছে এবং অনেক ছাত্রকে ধরে পুলিশের গাড়ীতে তুলে দিয়েছিল।
৬ই আগস্ট (২০২৪ খ্রি.) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ক্লাবের স্থায়ী সদস্যসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সম্পাদক ও সাংবাদিকরা সারাদিনব্যাপী সমাবেশ করে। ঐ সমাবেশে বিকেলে সিদ্ধান্ত হয়, ফ্যাসিবাদের দোসর, স্তাবক ও নির্যাতনকারী কমিটি বাতিল করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের একটি অন্তবর্তী কমিটি গঠন এবং অধিকার বঞ্চিত সম্পাদক-সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তা করা।
উপস্থিত সকলের সম্মতিক্রমে পাঁচ দশক ধরে থাকা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য, ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন প্রেস কাউন্সিল নির্বাহী পরিষদ সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও প্রেস জুডিসিয়াল কমিটির সাবেক সদস্য, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, চট্টগ্রাম এটিরস্ ক্লাব এর প্রধান উপদেষ্টা, খ্যাতিমান সম্পাদক-সাংবাদিক মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতকে আহ্বায়ক করে একটি অন্তবর্তী কমিটি ঘোষণা করে। ঘোষিত অন্তবর্তী কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় ও একমাত্র আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সততা ও নিরপেক্ষতার সাথে ইতিপূর্বে দায়িত্ব পালনকারী স্বনামখ্যাত নির্ভীক সম্পাদক-সাংবাদিক। সমবেত সম্পাদক-সাংবাদিকদের পক্ষে এ কমিটি ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ। ঐ কমিটি ৭ই আগস্ট চট্টগ্রামের সমাজকল্যাণ দফতরে জমা দেয়া হয়। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর সদ্য বিলুপ্ত কমিটি তালা দিয়ে ক্লাব বন্ধ করে চাবি রেখে নতুন অন্তবর্তী কমিটিকে কাজ করতে বিঘ্ন ও বাধা সৃষ্টি করেছে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব বন্ধ থাকায় ও অচলাবস্থায় সৃষ্টি হওয়ায় চট্টগ্রামের সম্পাদক ও সাংবাদিকরা বিভিন্নভাবে অসুবিধায় পড়েছেন।
এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এর অচলাবস্থা নিরসনে ‘চট্টগ্রাম এডিটরস্ ক্লাব’ ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ফোরামকে অথবা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত এর নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী কমিটিকে (সদস্যদের মধ্য থেকে কিছুটা রদবদল করে) চট্টগ্রামের বৃহত্তর সম্পাদক- সাংবাদিকদের স্বার্থে প্রশাসনিক আদেশ বলে দায়িত্ব প্রদানের ব্যবস্থা নিলে সুন্দরের আবির্ভাব ঘটবে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ফ্যাসিবাদী-
স্বৈরাচারের দোসর, গণদুশমন, ধান্দাবাজ সাংবাদিকদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে সংস্কারের পথে এগুতে পারবে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমাদের নিবেদনটি গ্রহণ করে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দায়িত্ব প্রাপ্তদের সাথে সাথে চট্টগ্রামের সৎ চরিত্রবান, নীতিবান, নির্লোভ, ত্যাগী সম্পাদক-সাংবাদিকদেরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংস্কারের কাজে অংশগ্রহণের সুযোগদান করুন।