মোহাম্মদ মাসুদ নিজস্ব প্রতিনিধি।
চট্টগ্রাম: ভারতর বন্যায় চট্টগ্রাম ঢাকা মহাসড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও স্থানীয় মৌসুমী শাক সবজি এবং কাচা মরিচের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম হয়েছে ৮০০ টাকার মতো। দেশের ইতিহাসে প্রায় তিন যুগের মধ্যে একসাথে আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয় ১১জেলা। বেড়েছে চালের দাম সহ নিত্য বাজার পন্যের দাম। দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় অর্ধ কোটিরও বেশি মানুষ।
মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রামের অক্সিজেন কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখা গেছে ৭০০ টাকা দরে। একই জাতের কাঁচা মরিচ কর্ণফুলী মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা দরে। তবে, নগরীর আমান বাজারে ৬০০ টাকাকা কাঁচামরিচ বিক্রি হতেও দেখা গেছে।
দুই দিনের ব্যবধানে নগরের খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। সেই সঙ্গে কিছুটা বেড়েছে বেগুনের দামও। তবে অন্যান্য সবজি ও মাছ–মুরগির দামে তেমন ওঠানামা দেখা যায়নি।
নগরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই দিনে মরিচ ও বেগুনের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। এ জন্য দামও সামান্য বেড়েছে। অন্যান্য সবজির সরবরাহ ও দাম আগের মতোই রয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে দেশের ১১টি জেলা বর্তমানে বন্যাকবলিত। এতে সবজির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন অনেক ভোক্তা। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, বন্যার কারণে সবজির মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা নেই। কারণ যেসব এলাকায় বন্যা হয়েছে, সেখান থেকে খুবই কম পরিমাণে সবজি ঢাকায় আসে।
তিনটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৬০০–৭০০ টাকা দরে। অথচ গত শনিবারে ৮০০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হয়েছিল। বাজারে বর্তমানে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে চট্টগ্রামে। ব্যবসায়ীরা প্রতিবেদককে জানান, বন্যার কারণেই তিন দিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রামে যান চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে। ফলে সরবরাহ না থাকায় চট্টগ্রামের বাজারে কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দিয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকা দরে।
কাঁচা মরিচের পাশাপাশি বাজারে বেগুনের দাম কেজিতে ১০–১৫ টাকা করে বেড়েছে। গতকাল প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ১১০–১৩০ টাকা দরে। তবে কিছুটা নিম্ন মানের বেগুন ১০–২০ টাকা কমেও পাওয়া যায়।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি, মুরগির ডিম, মাছ ও অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা, আলু ৫৫ টাকা, রসুন ২০০-২২০ টাকা ও আদা ২৬০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরায় এক সপ্তাহ আগের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা ও আলুর দাম ৫ টাকা কমেছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৫০–২৬০ টাকা এবং প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম ১৫০-১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ঢাকার একাধিক খুচরা বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, বন্যার কারণে মাছের দামে তেমন প্রভাব পড়েনি। গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ৩০০-৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে এ দামেই এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে। তবে বন্যায় অনেক গবাদিপশু মারা যাওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যে গরু ও খাসির মাংসের দাম কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ্য :ভারতের ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ খুলে দাওয়ায় ত্রিপুরা ডুবে পানিতে ভাসছে বাংলাদেশ। বন্যার উজানের পানিতে প্লাবিত হলে অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির শিকারে প্রায় অর্ধ কোটিরও বেশি মানুষ। বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আগে এবং পরে বাংলাদেশ থেকে ভারতকে বন্যার জন্য দায়ী করে আসছে। কিন্তু ভারত কোন মতেই এইটাই মেনে নেয়নি। বরঞ্চ ভারত সরকার উল্টো জবাব দিলেন বাঁধের ৯৪ মিটার বিপদ সীমার উপরে পানি উঠলে ওই দেশের নিরাপত্তা এবং ঝুঁকি থেকে বাঁচতে বাঁধ ছেড়ে দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ না নাই। এটা আবহাওয়া জলবায়ু ও প্রাকৃতিক বিষয়। বাঁধ ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের ক্ষয়ক্ষতি দায় ভারত কোনমতেই নিতে রাজি নয়। ১১ জেলার অর্ধ কোটি মানুষ পানিতে ভারতের বাঁধ ছেড়ে দাওয়ায়। জান মালহানী অপর নিয়োগ ক্ষয়ক্ষতি সবকিছু ছেড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে অনেকেই। সিংহভাগ মানুষ বর্তমানে মানবতার জীবন যাপন করছে।