মো.ইসমাইলুল করিম নিজস্ব প্রতিবেদক:
পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়িতে বন্যায় কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী। টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ির বন্যার পরিস্থিতি চরম অবনতি হওয়ায় হাজার হাজার পরিবারের স্বাভাবিক জীবন প্রায় বিপন্ন। টানা বর্ষণে জেলায় চতুর্থবারের মতো বন্যায় প্লাবিত হয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ।বৃহস্পতিবার (২২আগস্ট) দিনব্যাপী জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় পানি বন্দীদের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন সেনাবাহিনী। এদিন ঝুঁকিপূর্ণ বন্যার স্রোতের মাঝেও ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার বন্যায় কবলে আটকে পড়াদের উদ্ধার কার্যক্রম, শুকনো খাবার ও ত্রাণ বিতরণ করে সেনাবাহিনী। যতদিন পর্যন্ত বন্যার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবেনা, ততদিন পর্যন্ত চলবে সেনাবাহিনীর ত্রাণ বিতরণ ও সেবা কার্যক্রম। এদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি পরিদর্শন এবং সার্বিক দিকনির্দেশনায় দিয়ে যাচ্ছেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান। এদিন বিকালের দিকে বুক সমান বন্যার পানিতেও ঝুঁকি নিয়ে বন্যায় আটকে পড়া মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের বিএম মেজর সাদাত রহমান, ক্যাপ্টেন রাফিদ মাওলা সাকিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ও সেনাসদস্যরা অংশ নেন।অন্যদিকে সকাল থেকে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধার কার্যক্রমে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল আবুল হাসনাত (জুয়েল) এর নেতৃত্বে অংশ নেন সদর জোনে সেনা-সদস্যরা। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যায় কবলিত এলাকার মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে সেনাবাহিনী। প্রসঙ্গত; টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় চরম বিপর্যয়ের মুখে খাগড়াছড়িবাসী। রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম থেকে শহর। বিগত সময়ে খাগড়াছড়ি শহরে এর আগে বন্যায় প্লাবিত না হলেও বৃহস্পতিবার ভোর থেকে প্লাবিত শুরু হয়। ডুবেছে গেছে প্রায় ৮০-৯০টি এলাকা। এরমধ্যে জেলা সদরের মুসলিম পাড়া, আরামবাগ, শান্তিনগর, বাস টার্মিনাল, মেহেদী বাগ, বটতলী, টিটিসি এলাকা,উত্তর, স্বনির্ভর, কলেজ পাড়া, দক্ষিণ গঞ্জপাড়া, মাটিরাঙ্গার তাইন্দং, তবলছড়ি, পানছড়ি উপজেলা,দীঘিনালার মেরং বাজার কবাখালীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রেকর্ড পরিমাণ বন্যায় সকাল থেকে খাগড়াছড়ির সাথে রাঙামটির সাজেক, লংগদু, বাঘাইছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খাগড়াছড়ি থেকে দূরপাল্লা/ঢাকা-চ্ট্টগ্রামের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী বিকালের পর থেকে বন্যার পানি কিছুটা কমে আসছে। তবে নিম্নাঞ্চলে এখনো কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।